আরবি ঘোড়ার কথা এত শোনা যায়, আলপাইন ঘোড়ার কথা কেন কেউ
বলেনা! যদিও আরবি ঘোড়ার মত চিকন শরীর নয়, বরং বেশ
শক্ত সমর্থ৷ শীতের দেশের প্রাণী বলে গায়ে ঘন লোম৷ আর তাদের ঝামর ঝামর কেশর, তাতে
যেন বিদ্যুতের আভা৷ প্রথমে নজর কেড়েছিল ঘোড়াগুলোই৷ তাও একটা নয়, এক সঙ্গে দু
জোড়া৷ সাদা আর বাদামি মেশানো, সোনালী কেশরের ঘোড়াগুলোকে যে গাড়ির সঙ্গে জুতে
রাখা হয়েছে, তার রঙ ঊজ্জ্বল কালো৷ মাথা খোলা, মুখোমুখি চার আসনের এই গাড়িগুলোকে
বলে ‘লান্ডাউ’৷ জার্মানির লান্ডাউ শহরে
প্রথম তৈরি হয়েছিল এই ধরণের ঘোড়ার গাড়ি, তাই এই নাম৷
তা সেই লান্ডাউ-এর, এবং তার চার ঘোড়ারও সর্বাঙ্গে ফুলের
সাজ৷ গোটা গাড়িটা ফুলে সাজানো, তার ঘোড়াদের মাথায়, পায়েও ফুলের গয়না৷ ঠিক যেন
বিয়েবাড়ির গাড়ি৷ বর আসবে এক্ষুনি! আন্দাজটা
যে ঠিক ছিল, সেটা বোঝা গেল একটু পরেই৷ ছোট্ট শহর জেরমাট৷ সুইস আল্পস-এর সব থেকে
উঁচু শৃঙ্গ ম্যাটারহর্ন-এর একেবারে পায়ের কাছে৷ একসময় পর্বতারোহীদের জিরিয়ে নেওয়ার
জায়গা ছিল, একটা অখ্যাত গ্রাম৷ আর এখন পর্যটকদের ভিড়ে অস্থির একটা উপ শহর৷ সেখানে
একটিই মাত্র গির্জা৷ এতই ছোট শহর যে গির্জার ঘন্টা বাজলে সারা শহরে শোনা যায়৷
ভরদুপুরে সেখানেই ঢং ঢং ঢং ...৷ কী হয়েছে, না বিয়ে হচ্ছে৷ শোনা মাত্রই দৌড় দৌড়
দৌড়৷ নেমন্তন্ন নেই, তাতে কী! রবাহূতরা কি যায় না রাস্তার প্রসেশন
দেখতে! গির্জার ঘন্টাধ্বনি শেষ হতেই বেজে উঠল ভ্যাঁপ্পোর ভোঁ
ব্যান্ড পার্টি৷ কিন্তু তাদের যেন তাল কাটছে বারে বারেই৷ ভেঁপুর সঙ্গে করতালের
মিলমিশ হচ্ছে না৷ ক্ল্যারিওনেটের পিছু নিতে গিয়ে বার বার পথ হারাচ্ছে স্যাক্সোফোন৷
গিয়ে দেখা গেল এক মজার ব্যাপার৷ বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে
নতুন বউ গির্জার বাইরে বেরোনোর পরই তাকে একটা পরীক্ষা দিতে হয়৷ বাইরের চত্বরে
দাঁড়িয়ে থাকে বাজনদারদের একটা দল, তার ব্যান্ড মাস্টারের ভূমিকায় নামতে হয় কনেকে৷
কী দূরবস্থা৷ হয়তো আগের রাতেই সে নেচে এসেছে কোনও ডিস্কোতে৷ কিন্তু আজ তাকে প্রমাণ
দিতে হবে, সংসারে কতটা মিলমিশ ঘটাতে পারে সে৷ পাঁচরকম বাজনার পাঁচমিশেলি আওয়াজ কতটা
এক সুরে বাজে তার হাতে, তারই পরীক্ষা৷ এবার একটা মজা হয়৷ নতুন বউ যতই চেষ্টা করুক
আর প্রাণপণে হাতের ব্যাটন নাড়িয়ে যাক, বাজনদাররা কেউ তার কথা শোনে না৷ বরং ইচ্ছে
করে উল্টোপাল্টা বাজায়৷ এবার পরিত্রাতার ভূমিকায় আসে স্বয়ং বর৷ জমাদারদের যে ময়লা
ফেলার হাতে ঠেলা গাড়ি আছে, সেই গাড়ি নিয়ে হাজির হয় সে৷ গাড়ি যদিও পরিস্কার
ঝকঝকে, ময়লার চিহ্নমাত্র নেই তাতে৷ সেই গাড়িতে বউকে চাপিয়ে সে পালাবার চেষ্টা
করে৷ কিন্তু তাতেও কি রক্ষে আছে৷ সেই ঠেলা গাড়ির পিছনে দড়ি দিয়ে বাঁধা রাজ্যের
বাতিল শিশি-বোতল, কৌটোকাটা৷ রাস্তায় তাদের আছড়াবার ঠাঁইঠকাস শব্দ শুনে হৈ হৈ করে
তাদের তাড়া করে বরপক্ষ, এমনকি কনে পক্ষের লোকজনও৷ যেন এখনই আপদ বিদায় হোক৷ বরের
কাজ হচ্ছে এই মারমুখী আত্মীয়-স্বজনদের হাত এড়িয়ে, নতুন বউকে নিরাপদে বার করে নিয়ে
যাওয়া৷
চমৎকার, না? ভবিষ্যৎ
জীবনে নবদম্পতির কার কী ভূমিকা হবে, কার কী দায়িত্ব হবে, খেলাচ্ছলেই সেটা একবার
মনে করিয়ে দেওয়া৷ একজন সংসার সামলাবে৷ সমস্ত অসুবিধে, অসহযোগিতা সামলেও সে জীবনকে
এক সুরে বেঁধে রাখবে৷ আরেকজন সামলাবে, যে সব কিছু সামলে রাখছে, তাকে৷ সমস্ত ঝড়ঝাপটা
থেকে তাকে আগলে রাখবে, নিরাপদে রাখবে৷ পুরোটাই খেলাচ্ছলে বুঝিয়ে দেওয়া৷ কিছুক্ষণ
পরেই আবার সেই চার ঘোড়ার গাড়িতে হাসতে হাসতে, হাত নাড়তে নাড়তে হাজির বরকনে৷
এবার তাদের আনুষ্ঠানিক স্বাগত জানানোর পালা যত অতিথি-অভ্যাগতদের৷ সবাই সার দিয়ে রাস্তার
দুধারে দাঁড়িয়ে খই আর ফুল ছুঁড়ে বরন করল নবদম্পতিকে৷ আবার বেজে উঠল ব্যান্ড৷
এবার নিখুঁত ওয়ালৎজ-এর ছন্দে৷ প্রথমে বর-কনে, তারপর একে একে নাচতে শুরু করল সবাই৷
তবে এমন আনুষ্ঠানিক বিয়ে আজকাল কমই হয়৷ এত সময় কোথায় লোকের৷
সবাই ব্যস্ত৷ কেউ হয়তো অফিসের লাঞ্চ আওয়ারে বেরিয়ে এসেছে টুক করে বিয়েটা সেরে নেবে
বলে৷ পাত্র, পাত্রী, তাদের গুটিকয় ঘনিষ্ঠ বন্ধু, যারা হয়তো সইসাবুদের বিয়ের সাক্ষী
হবে, তারাও ওইভাবেই এসেছে, ধরাবাঁধা সময় হাতে নিয়ে৷ ইউরোপের ছোট বড় সব শহরেই একটি
করে টাউন হল থাকে, যেখানে একজন আংশিক সময়ের ম্যারেজ রেজিস্ট্রার থাকেন৷ কে জানে,
তিনিও হয়তো অফিসের ফাঁকে এসে এই সামাজিক দায়িত্বটা সামলে যান! তাঁর কাছে এসে আগাম নোটিস দিয়ে যেতে হয়, যথারীতি৷ মাসখানেক
টাউন হলের নোটিস বোর্ডে সেই বিজ্ঞপ্তি ঝোলে, অমুক চন্দ্র তমুক বিয়ে করতে চলেছেন তুসুক
কুমারী-কে৷ কারও যদি এই বিয়েতে আপত্তি থাকে ... ইত্যাদি৷ তারপর নির্দিষ্ট দিনে
সই-সাবুদ, আংটি বদল হয়ে যায়৷ পাঁচ মিনিটে বিয়ে সারা৷ অবশ্য এর পর একটা মজার
ব্যাপার থাকে৷ শহুরে বিয়েতে যেটা প্রায়ই দেখা যায়৷ বর-কনে আর তাদের বন্ধু
বান্ধবেরা সবাই মিলে গাড়ির মিছিল করে রাস্তা দিয়ে এক চক্কর ঘোরে, তারস্বরে হর্ন
বাজাতে বাজাতে৷ এমনিতে ওসব দেশে রাস্তায় হর্ন বাজানোটা অসভ্যতা৷ এমনকী সামনের
গাড়ি হয়তো অকারণে অত্যধিক ধীরে চলছে, পিছনের গাড়ি তখনও হর্ন বাজায় না৷ কিন্তু
তার পর জায়গা পেলে, এবং সামনের রাস্তা খোলা পেলে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় ছোট্ট করে
একবার হর্ন বাজিয়ে যায় অনেকেই৷ সেটা স্রেফ প্যাঁক দিয়ে যাওয়া৷ যেন, “কী করছেন মেসোমসায়, গরুর গাড়ি চালালেই তো পারেন!” তো সেখানে, রাস্তা দিয়ে গাড়ির মিছিল করে হর্ন বাজিয়ে
যাওয়ার একটাই মানে দাঁড়ায়৷ কেউ সদ্য বিয়ে করেছে৷ পথ চলতি বুড়ো-বুড়িরা সেই সমবেত
হর্ন শুনে দাঁড়িয়ে যান, উঁকি মেরে দেখার চেষ্টা করেন নতুন বউ কেমন হল৷ চোখাচোখি
হলে হাসেন, হাত নাড়েন৷ রাস্তার অন্যান্য গাড়ি সেই হর্ন শুনে পাল্টা হর্ন বাজায়৷
যেন শুভেচ্ছা৷ দাম্পত্য সুখের হোক৷ ভালো থাকো৷ সন্ধেবেলার শাঁখের শব্দের মত সেই
শুভেচ্ছাবার্তা ছড়িয়ে যায় শহরের হাওয়ায় হাওয়ায়৷
আরেকটা মজার প্রথা আছে জার্মানির কোথাও কোথাও, ইটালির কিছু
অংশেও৷ জার্মান ভাষায় বলে পোল্টার-আবেন্ড৷ বিয়ের আগের দিন সন্ধেতে আত্মীয় স্বজনরা
জড়ো হয় কনের বাড়িতে, পুরনো চিনেমাটির বাসন হাতে নিয়ে৷ সেই বাসন তারা আছড়ে ভাঙে কনের
বাড়ির দরজার সামনে৷ কনের কাজ হল ঝাঁটা হাতে রেডি থাকা৷ বাসন ভাঙলেই সেটা ঝটপট সাফ
করে ফেলা৷ কনে বা তার বাড়ির লোকেরা যদি একটু বেশি জনপ্রিয় হয় তাহলে অনেক সময় পাড়া-প্রতিবেশীরাও
অংশ নেয় এই বাসন ভাঙার খেলায়৷ সে এক দৃশ্য! গোটা
পাড়া ঝনঝনিয়ে বাসন ফেলে দিচ্ছে রাস্তার ওপর৷ খোলা জানলা দিয়ে মুহূর্মুহূ উড়ে
আসছে চিনেমাটির পেয়ালা-পিরিচ থেকে শুরু করে কানা ভাঙা গামলা, জলের জাগ, ফুলদানি৷
আর কনে বেচারি পেল্লায় একখানি ঝাঁটা হাতে রাস্তার এমাথা থেকে ওমাথা দৌড়ে
বেড়াচ্ছে, আর সেই ভাঙা বাসনের টুকরো পরিস্কার করতে গলদঘর্ম
হচ্ছে৷ কেউ তাকে সাহায্য না করলেও রাস্তার দুধারে, বা বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে সবাই
হাততালি দিয়ে তাকে উৎসাহ জোগায়, আর হেসে কুটিপাটি হয়৷ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই
পোল্টার আবেন্ড শেষ হয় সমবেত বিয়ার পানে, এবং আরও তুমুল হই হল্লায়৷
বিয়ের আগের রাতের আরও একটা ফাজলামো আছে জার্মানিতে, অবশ্য
একটু গ্রাম-মফস্বলের দিকে৷ বিয়ের অনুষ্ঠানে বরের যে বেস্ট ম্যান হবে, সে এবং বাকি
বন্ধু-বান্ধবরা মিলে লুকিয়ে ফেলে কনে-কে৷ লুকনোর জায়গাটা হয় এলাকারই কোনও পানশালা৷
বর বাবাজির কাজ হল, কোন পানশালায় বউ লুকিয়ে আছে, সেটা খুঁজে বার করা৷ ব্যাপারটা
আরও রংদার করার জন্য নানারকম শর্ত চাপিয়ে দেওয়া হয় অনেকসময়৷ যেমন কোনও পানশালায়
গিয়ে ভাবী বউকে খুঁজে না পেলে শুকনো মুখে বেরিয়ে এলে হবে না৷ বসে এক পাত্তর খেয়ে
আসতে হবে৷ ফলে বর বেচারিকে যদি গোটা পাঁচ-ছয় পানশালাও ঘুরে আসতে হয়, তাহলেই তো
পরিস্থিতি যথেষ্ট টলমলে! আর কনে আর তার বন্ধুরাও তো স্রেফ লুকিয়ে
বসে নেই৷ তারাও দেদার টানছে বিয়ার, আর মাঝে মাঝে নেশা পাকাবার জন্য কড়া ধেনোর মত
শ্নাপস্৷ তাদের এই খানাপিনার পুরো খরচটা বরকেই দিতে হবে৷ এই কনেখোঁজার সেটাই শেষ
আবশ্যিক শর্ত৷ কোনও ছাড় নেই৷ কাজেই সবসময় ব্যাপারটা যে হাসিমুখে, হাত ধরাধরি করে শেষ হয়, তা নয়৷ বরং অনেকসময় ঝগড়া, হাতাহাতি, ছেঁড়া জামা
আর চোখে কালশিটে পর্যন্ত গড়ায়৷ এবং ভাবী স্বামী-স্ত্রীর অন্তিম সংলাপ প্রায় ক্ষেত্রেই
এরকম হয় যে, মাত্র চুরাশি বোতল বিয়ারের দাম তুমি দিতে পারলে না! ছিঃ!! অথবা, লজ্জা করল না সারাক্ষণ ওর গায়ে ওরকম লেপ্টে
থাকতে? কাল তোমার বিয়েটা আমার সঙ্গে হবে, না ওর সঙ্গে?
কিন্তু সমস্যা অন্যত্র৷ এই প্রেম-অপ্রেম, ভালবাসা-ঈর্ষা
বিনিময়ের জন্যেও যে সম্পর্কের ভাঙা-গড়া হয় আজকের ইওরোপে, সেটা আর যাই হোক, বিয়ে
নয়৷ আজকালকার ছেলে-মেয়েরা বিয়ে করতে চায় না৷ বন্ধুত্ব আছে, প্রেম আছে, যৌনতা আছে,
ইচ্ছে হলে এক সঙ্গে থাকাও আছে, কিন্তু বিয়ে ব্যাপারটা বাদ হয়ে গেছে জীবন থেকে৷ আর
যদিও বা শখ করে বিয়ে হয়, বাচ্চা-কাচ্চার ‘ঝামেলা’ কেউই চায় না৷ জার্মানির মত দেশে এটা এখন একটা পুরনো রোগ৷ ফলে জন্মহার কমে
যাচ্ছে দ্রুত৷ অন্যদিকে চিকিৎসা ব্যবস্থা যত ভাল হচ্ছে, জীবনের মান যত উন্নত
হচ্ছে, গড় আয়ু বাড়ছে লোকের৷ ফলে জার্মানি ক্রমশ বুড়ো-বুড়িদের দেশ হয়ে যাচ্ছে৷
বার্ধক্যের হিসেবে, বয়স্কদের গুনতিতে সারা বিশ্বে এখন তিন
নম্বরে জার্মানি৷ জাপান এবং ইটালির পরেই৷ বিয়ে নামক মান্ধাতার আমলের সামাজিক
প্রথাটা এখনও টিকে আছে ওই নড়বড়ে বুড়ো-বুড়িদের ভরসাতেই৷ যাদের সন্ততিদের কারও
বিয়েতে ভরসা নেই!
“বিয়ে করার কথা ভাবলেই ভয় লাগে৷ ভাবা যায়, রোজ সকালে উঠে একই লোকের মুখ দেখতে
হবে!” বলেছিল পরিচিত একটি মেয়ে৷ তার পরেও বিয়ে করেছিল সে৷ কিন্তু
সে বিয়ে টেকেনি৷ আরেকটি ছেলে, বোধহয় খুব সংসার করার শখ ছিল তার, কিন্তু পরপর দুটো
বিয়ে ভেঙে গিয়েছিল বেচারির৷ আইনি বিবাহ বিচ্ছেদের চুক্তি মাফিক দুই প্রাক্তন বউকে
খোরপোষ দিতে গিয়ে, দুটো, তিনটে শিফটে কাজ করতে হত তাকে৷ তার পরেও আবার সংসার পাততে
গিয়েছিল সে৷ কিন্তু তিন নম্বর বিয়েটাও যখন নষ্ট হওয়ার মুখে, দেড়শো ফুট উঁচু একটা
ক্রেনের মাথা থেকে লাফ দিয়েছিল একদিন৷
বিদেশে, কোনও কোনও বিয়ের চুক্তিপত্রে নাকি লেখা থাকে, এই
বিয়ে যদি না টেকে, তাহলে যৌথ সম্পত্তির কীভাবে ভাগ বাঁটোয়ারা হবে৷ মানে টিভিটা কে
নেবে, গাড়িটার কী গতি হবে, মায় বিয়েতে পাওয়া উপহারগুলোর কী হবে, তাও পরিস্কার বলা
থাকে দাম্পত্যের সেই অন্তিম ইচ্ছাপত্রে৷ আসলেই৷ প্রত্যেক মিলনের মধ্যেই থেকে যায়
বিচ্ছেদের বীজ৷ প্রত্যেক বন্ধনের মধ্যেই যেমন থাকে মুক্তির আকাংখা৷
No comments:
Post a Comment